গাজীপুর সদর উপজেলায় এক অসুস্থ বৃদ্ধকে তার সন্তানরা জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। তিন দিন ধরে অমানবিকভাবে পড়ে থাকার পর স্থানীয়রা বিষয়টি থানায় জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বৃদ্ধকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। পরবর্তীতে ওই বৃদ্ধের দায়িত্ব গ্রহণ করেন জয়দেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হালিম।
উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধের নাম সাকিব আলী সরদার, যিনি শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার চরডিপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, বৃদ্ধটি কিছু দিন আগে ঢাকার বাড্ডা এলাকায় তার বড় মেয়ের বাসায় ছিলেন। কিন্তু, এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বড় মেয়ে ও জামাতা তার অন্যান্য সন্তানদের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বি কে বাড়ি বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে যান। তবে বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থার কারণে তাকে সেখানে রাখতে অক্ষমতা প্রকাশ করে।
এরপর তার সন্তানরা বৃদ্ধকে সেখানে না রেখে গাজীপুর সদর উপজেলার একটি জঙ্গলে ফেলে চলে যান। তিন দিন পরে স্থানীয়রা তাকে খুঁজে পেয়ে থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম জানান, ৪ ডিসেম্বর বিকেলে থানার অধিক্ষেত্রের একটি জঙ্গলে ওই বৃদ্ধের পড়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে তিনি অত্যন্ত নোংরা অবস্থায় ছিলেন, তার শরীরে মলমূত্র লেগে ছিল এবং এক পায়ে ক্যানুলা লাগানো ছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাতেই থানার গাড়িতে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওসি আরও জানান, চিকিৎসা শেষে বৃদ্ধকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হবে এবং তার সমস্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বৃদ্ধের দায়িত্ব নেবেন এবং তার পরিবারের কাছে এমন নিষ্ঠুরতার শাস্তি দাবি করবেন। এ ঘটনায় এলাকার মানুষও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং পরিবারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন