অনুসন্ধানী প্রতিবেদক:
রাজধানী ঢাকার এমন কোনো অলিগলি নেই, যেখানে রেস্টুরেন্ট পাওয়া যাবে না। ঢাকা এখন রীতিমতো রেস্টুরেন্টের নগরীতে পরিণত হয়েছে। বেইলি রোড, ধানমন্ডি, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর উত্তরা এলাকা যেন রেস্টুরেন্ট হাব। রাস্তার দুই পাশে আবাসিক ভবনে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অংসখ্যা হোটেল-রেস্তোরাঁ। যথাযথ মনিটরিং ও সক্ষমতার অভাবে এসব রেস্টুরেন্ট থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যৎসামান্য ভ্যাট আদায় করতে পারছে। যদিও এ খাতে ভ্যাট আদায়ের বিপুল সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মোট দেশ উৎপাদন বা জিডিপিতে হোটেল-রেস্টুরেন্ট খাতের অবদান জানতে ২০২৩ সালে একটি জরিপ চালায়। জরিপের তথ্য মতে, ২০০৯-১০ সালে যেখানে দেশে হোটেল-রেস্টুরেন্টের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার, সেখানে ২০২৩ সালে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৫ লাখ। এক দশকে জিডিপিতে মূল্য সংযোজন বেড়ে হয়েছে আট গুণ।
ভ্যাট আইন অনুযায়ী, পণ্য ও সেবার বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করে প্রতি মাসে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোর দায়িত্ব। কিন্তু অনেক রেস্টুরেন্ট ভ্যাট আদায় করলেও সরকারি কোষাগারে জমা দেয় না। এনবিআর ভ্যাট ফাঁকি রোধে রাজধানীজুড়ে নিয়মিত অভিযান চালালে নামিদামি অনেক রেস্টুরেন্টের ভ্যাট ফাঁকির চাঞ্চল্যকর তথ্য জনসমক্ষে আসে। গুলশানের পূর্ণিমা রেস্টুরেন্ট, মাদানি অ্যাভিনিউ’র শেফস টেবিল, ধানমন্ডির স্টার রেস্টুরেন্ট, গুলশানের খানা খাজানা, দ্য মিরাজ, র’ ক্যানভাসের মতো রেস্টুরেন্টকে জরিমানা করা হয়। বর্তমানে সেই অভিযান কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। ভ্যাট ফাকির তালিকায় নতুন নাম লিখিয়েছে বাংলা কিচেন, যারা রাজধানী জুড়ে অর্ধশতাধিক শাখা নিয়ে অনিয়মের উচ্চে অবস্থান করছে।
সরেজমিনে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি ও মালিবাগ এলাকার কয়েকটি রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার অধিকাংশ রেস্টুরেন্টে ভ্যাট নেওয়া হয় না। আবার অনেক রেস্টুরেন্ট নিজস্ব সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভ্যাট আদায় করছে। সেই ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দিচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ভ্যাট আদায়ের দায়িত্বে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ব্যবসা চালাচ্ছে। বাংলা কিচেনের অধিকাংশ শাখায় ভ্যাট আদায় করা হয় না। কোন শাখায় হাতের লেখা কাগজ না দিয়েই ভোক্তাদের কাছ থেকে বিল আদায় করা হয়। এমনকি বিক্রির তথ্য গোপন করতে মোবাইল ব্যাংকিং বা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডে বিল নেওয়া হয় না।
সার্বিক বিষয়ে বাংলা কিচেনের এজিএম হাফিজুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার বক্তব্য প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান।
অনুসন্ধান চলমান পর্ব-১