মোঃ আশরাফুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের এক উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ছয় বছরের চাকরিজীবনে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তার চাকরি জীবনের শুরু নারায়ণগঞ্জ রোড ডিভিশনে হলেও, ময়মনসিংহ অঞ্চলের ভালুকা সাব-ডিভিশনে বদলি হওয়ার পর থেকেই তার আর্থিক উত্থানের শুরু।
ভালুকায় দুটি ব্রিজের কাজ থেকে ঘুষ নিয়ে টাকার ভাগাভাগি করা আশরাফুলের দুর্নীতির যাত্রাপথ উন্মোচন করে। এরপর টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর সেকশনে যোগদানের পর থেকে তিনি ব্যাপক অর্থবিত্ত গড়ে তোলেন। ভুয়াপুর-এলেঙ্গা এবং ভুয়াপুর-তারাকান্দা সড়ক প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকারও বেশি ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তার বিরুদ্ধে মাটির বিল এবং অন্যান্য কাজ নিয়ে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় আবেদন করা হলেও, বিভিন্ন তালবাহানার মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে। ভুয়াপুরের ঠিকাদার জনি এবং ইমদাদুল হক সুমনসহ আরও কয়েকজন ঠিকাদারকে নিয়ে তিনি স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন, যা দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ ভাগ করে নেয়।
স্থানীয় সূত্র মতে, আশরাফুলের জীবনযাপন উচ্চবিত্তদের মতো। প্রতি বছর পরিবারের বিশজন সদস্যকে নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণের খরচ বহন করেন তিনি। তার শশুর, এক সময়ের মেডিকেল লেবার কন্ট্রাক্টর, এখন জামাতার টাকায় পরিচিত কোটিপতি ব্যবসায়ী।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শওকত আলীর ছোট ভাই জোবায়দুর রহমানের সাথে তার দহরম-মহরম সম্পর্ক তাকে আরও ক্ষমতাবান করে তোলে। তৎকালীন সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম তাকে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে চলতি দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা করেন।
অফিসের ভেতরে এবং বিভিন্ন রিসোর্টে তার সিন্ডিকেটের আয়োজিত মদের আসর দুর্নীতির মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এভাবে তিনি নিজে এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে তার প্রভাবশালী নেটওয়ার্কের কারণে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, তিনি দায় এড়িয়ে যেতে পারেন।
দ্বিতীয় পর্বে থাকবে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।