সাইদুল ইসলাম আবির, সিরাজগঞ্জ:
এক সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুল কিনে এনে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে বিক্রি করতেন মেহেদী হাসান মানিক নামে এক যুবক।
কিন্তু সেই ফুল ৩ থেকে ৪ দিনের বেশি সময় তরতাজা রাখা সম্ভব হতো না। ফলে বেশি ফুল সংগ্রহ করে লোকসানে পড়তে হতো তাকে। বর্তমানে ডিগ্রি ২য় বর্ষে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেই চান্দাইকোনা ইউনিয়নের বেড়াবাজুয়া এলকায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে স্বল্প পরিসরে গাদা ও গোলাপ ফুলের চাষ শুরু করেন।
বর্তমানে নিজের উৎপাদিত ফুল রাজধানী ঢাকা, সিরাজগঞ্জ ও গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন মেহেদী হাসান মানিক।
রায়গঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম ফুল চাষ করেই সফলতার স্বপ্ন দেখছেন তরুণ এই উদ্যেক্তা মেহেদী হাসান মানিক। তিনি রায়গঞ্জ পৌর সভার ধানগড়া এলাকার মো: আইয়ুব আলী'র ছেলে।
ধানগড়া পৌর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বর্তমানে পুষ্প বিতান নামে তার একটি ফুলের দোকান রয়েছে। তিনি ৫ বছর ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের ডালা সেই সাথে বিয়ে বাড়ির ঘর, গাড়ি সাজানোসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুল বিক্রি করেন।
শুরুতেই স্বল্প পরিসরে ফুল চাষ করে সফলতা অর্জনের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। অন্যের ১৫ শতাংশ জমি বাৎসরিক লিস নিয়ে লাল লিংকন জাতের গোলাপ ও চাপা গাদা ফুল চাষ করেন তরুণ এই উদ্যোক্তা।
তার বাগানে প্রতিদিন ফুলপ্রেমী দর্শনার্থীরা ভিড় জমান। ফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে মন জুড়ায় তাদের। সেই সঙ্গে চলে ফুলের সঙ্গে সেলফি তোলা।
তরুণ এই উদ্যোগক্তা দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি একটি ফুলের দোকান দিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য জেলা শহর থেকে ফুল ক্রয় করে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু সেই ফুল বেশিদিন টিকে না থাকায় বিকল্প হিসাবে পরিক্ষা মূলকভাবে মাত্র ১৫ শতাংশ জমিতে এই দুই প্রজাতির ফুল চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। আর প্রথম পর্যায়ে ফুল বিক্রি করেছি ৩০ হাজার টাকা। আবহাওয়া ও দাম ভাল থাকলে সব খরচ বাদে প্রায় দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা লাভ হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, আগে আমি অন্যের কাছে ফুল কিনতে যেতাম আর এখন অন্যরা আমার কাছে কিনতে আসছে। গাইবান্ধা ও পাবনা থেকে পাইকাররা এসে বাগান থেকেই ফুল কিনে নিয়ে গেছে। তবে অন্য ফসলের তুলনায় ফুল চাষে উৎপাদন খরচ একটু বেশি হলেও লাভও অনেক বেশি। সরকার থেকে ফুল চাষিদের প্রশিক্ষণ, কৃষি উপকরণ এবং সহায়তা প্রদান করা হলে ফুলের আবাদ বাণিজ্যিক বৃদ্ধিসহ এর বাজার আরো সম্প্রসারিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, রায়গঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ শুরু হয়েছে। নিয়ম মেনে ফুলের চাষ করলে অনেক বেকার তরুণের মধ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সেই সাথে অর্থনৈতিক ভাবে স্ববলম্বী হবে দেশ। আমি আশা করি আরো নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে বেকার সমস্যা দূর হবে। আর মেহেদী হাসান মানিকের মতো সকল কৃষি উদ্যোগক্তাদের সব সময় সার্বিক পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে উপজেলা কৃষি অফিস।
ধান ও সবজির উপজেলা রায়গঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ হচ্ছে। এ ফুল চাষ করে ঘুরছে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং এ ফুলের ভালো দাম পেলে এ অঞ্চলে ফুল চাষের পরিধি আরও বেড়ে যাবে এমনটাই মন্তব্য করেছেন কৃষিবিদরা।
Chief Editor: Saidur Rahman Rimon
Acting Editor: Neamul Hassan Neaz
Office: +8809611584881, 01320950171
E-mail: newsnbb365@gmail.com
Copyright © 2025 NBB. All rights reserved.