নিয়াজ, স্টাফ রির্পোটার:
রাজধানীর ফুটপাত পথচারীদের জন্য তৈরি হলেও হেঁটে চলাই যেন মুশকিল। পথচারীদের জন্য নির্ধারিত এই পথে ভ্রাম্যমাণ হকাররা জুতা, কাপড়, ফলসহ নানা ধরনের দোকান দিয়ে দখল করে রেখেছে।
এতে চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে এবং শহরের সৌন্দর্য ক্ষুণ্ন হচ্ছে। কোথাও এসব দোকানে ফুটপাত অর্ধেক দখলে আবার কোথাও গোটা ফুটপাতই দখল করে চলছে এসব ব্যবসা। বোঝাই যায় না যে, এখানে ফুটপাত রয়েছে। কোথাও কোথাও ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তায়ও চলে আসে এসব ভ্রাম্যমাণ হকারের দোকান।
রাজধানীর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন পাশেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হওয়ায় এটি ভিআইপি স্টেশন হিসেবে পরিচিত, এ রেলওয়ে স্টেশনে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আন্তঃনগর সহ বিভিন্ন ট্রেনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন এলাকার বেশিরভাগ খালি জায়গা ও ফুটপাত দখল করে রেখেছেন হকাররা। রেলওয়ে স্টেশনের পার্কিং এলাকাসহ আশপাশে শতশত দোকান বসিয়েছেন তারা। ফলে রেলওয়ে স্টেশনে আসা যাত্রী ও পথচারীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রতিদিন। প্রতিদিন হাজার টাকা চাঁদার বিনিময়ে তারা এসব দোকান বসান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলে জানা গেছে।
রেলওয়ে স্টেশনজুড়ে হকাররা বসিয়েছেন জুতা, শরবত, টি-শার্ট, শীতের গরম কাপড়সহ বিভিন্ন ফলের দোকান। শুধু তাই নয়, রেলওয়ে স্টেশনের লেভেলক্রসিং ও রেললাইনের উপরও রয়েছে তাদের এসব ভ্রাম্যমাণ দোকান। এসব দোকানের কারণে রাস্তা পারাপারের উপায়ও নেই।
সড়ক পারাপারের ফুটওভার ব্রিজে ওঠার একপাশের লিফট নষ্ট থাকায় এইপথ দিয়েই ফুটওভার ব্রিজে উঠতে হয় পথচারীদের। অথচ এখানে এসব দোকান থাকায় বেশির ভাগ পথচারীকেই মূল সড়ক ব্যবহার করতে হয়। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এছাড়া হাজী ক্যাম্পের দিকে যেতে রাস্তার উপরে, রেললাইনের দুপাশে ফলের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান বসানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী পথচারী আয়শা আক্তার জানান, প্রতিদিনই এই পথ দিয়ে আশকোনায় যেতে হয়। কয়েকদিন খালি থাকলেও জায়গাটি আবার হকাররা দখল নিয়েছে। এই অল্প একটু জায়গায় এত মানুষ দোকান নিয়ে বসলে আমরা পথচারীরা কীভাবে রাস্তা পারাপার হবো। আমাদের হাঁটার জায়গাও নেই ফুটপাত দখলের কারণে।
আরেক পথচারী কাওসার বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষ চাইলে এখানে হকার বসার সাহস পাওয়ার কথা না। অথচ টাকার বিনিময়ে তারা এখানে বসছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট এক হকার জানান, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বে থাকা এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের নামে প্রতিদিন প্রতি দোকান থেকে ১ থেকে দেড় হাজার করে টাকা তোলা হচ্ছে। স্টেশনের দায়িত্বে থাকা ওই কর্মকর্তাদের মনোনীত লাইনম্যানের মাধ্যমে, সময়মত পৌঁছে যায় এসব টাকা। পরে পদ অনুযায়ী রেলওয়ের আরএনবি নিরাপত্তা শাখা,স্টেশন মাস্টার ও বিমানবন্দর থানার পুলিশ বক্স কর্তৃপক্ষ ভাগাভাগি করেন আদাকৃত চাঁদার টাকা।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর রেলওয়ের আরএনবি নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা সিআই মো. সালাউদ্দিন ভূঁইয়া এনবিবিকে বলেন,কার পার্কিং এর জায়গায় এবং আশেপাশে হকার উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। তবে উচ্ছেদের কিছু সময় পরে আবারও হকারদের দখলে চলে যায় জায়গাটি।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের ম্যানেজ করে নিয়মিত চলছে ফুটপাতের চাঁদাবাজী। ফলে উচ্ছেদ অভিযানে কোনো ফল হয় না।
চাঁদা ভাগাভাগির বিষয় জানতে স্টেশন মাস্টার মো. শাহাদাত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি চাঁদা ভাগাভাগির বিষয় এনবিবিকে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।