অনুসন্ধানী প্রতিবেদক : রাজউকে চাকরি করে অল্পদিনেই কোটিপতি বনে গেছেন গোপালগঞ্জের নির্মল মালো। মাছ ব্যবসায়ী থেকে বাবাকে বানিয়েছেন মৎস্যজীবী লীগ নেতা। এ যেন আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার মতো অবস্থা। কী নেই নির্মল মালোর? ৭ বছর চাকরির বয়সে ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট, গাড়ি, গ্রামের বাড়িতে ডুপ্লেক্স বাড়ি, বিশাল মাছের ঘের সবই আছে তার। এ যেন রূপকথার কাহিনী।
কথিত আছে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (রাজউক) চাকরি মানেই ‘আলাদিনের চেরাগ’ হাতে পাওয়া। রাজউকে ছোট বড় কোনো পদে চাকরি পেলে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় না। অল্প দিনেই হয়ে যায় কোটিপতি। বিত্ত-বৈভবে ভরে ওঠে চারদিক।
২০১৮ সালে রাজনৈতিক প্রভাব ঘাটিয়ে রাজউকে ইমারত পরিদর্শক পদে চাকরি পান নির্মল মালো। মাত্র ৭বছরেই হয়ে যান শত কোটি টাকার মালিক। কোটালীপাড়া পৌরসভার বাগান উত্তরপাড়া গ্রামে ১০ কাঠা জায়গার ওপর নির্মাণ করেন ডুপ্লেক্স বাড়ি।
এছাড়া পৌরসভার উত্তরপাড়ায় ২০ বিঘা জমির ওপর পোল্ট্রি ফার্ম, কান্দি ইউনিয়নের আমবাড়িতে ৪০ বিঘা জমির মাছের ঘের, উজিরপুরের সাতলায় ৩৫ বিঘা জমির মাছের ঘেরসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে বেনামে জমি ক্রয় করেছেন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
অপরদিকে রাজধানীর ঢাকার আফতাবনগরের ডি-ব্লকের ৫ নম্বর রোডের লেক ভিউ কটেজে আধুনিক ফ্ল্যাট, কুড়িল বিশ্বরোড়ে প্লট ও ওয়ারী এবং মগবাজারে ফ্ল্যাট রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
নির্মল মালো রাজউক মহাখালী জোনে ইমারত পরিদর্শক পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বাগান উত্তরপাড়া গ্রামের নিত্যগোপাল মালোর ছেলে। ছেলের চাকরির আগে নিত্যগোপাল মালো ছিলেন একজন সামান্য মৎস্য ব্যবসায়ী। নির্মল মালো চাকরি পাওয়ার পর তার অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এলাকায় প্রভাব প্রতিপত্তি। নিজের প্রভাব খাটিয়ে পিতা নিত্য মালোর জন্য ভাগিয়ে নেন উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ। রাজনৈতিক এই পদ ব্যবহার করে বাবা-ছেলে হয়ে ওঠেন অঢেল সম্পদের মালিক।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, সামান্য দশম গ্রেডে চাকরি করে নির্মল মালোর ঢাকায় রয়েছে দামি প্রাইভেটকার, নিজে ৩টি দামি মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন। কোটালীপাড়ায় রয়েছে ক্যাফে জয় বাংলা নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মাত্র ৭ বছর চাকরি করে তিনি কীভাবে এতো সম্পদের মালিক হলেন?। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নির্মল মালোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।