• বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ১০:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহীত টিসিবির পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ভোক্তারা কিশোরগঞ্জে ফাজিল মাদ্রাসায় ভুয়া কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ সাভারে ৯৪ বোতল ফেনসিডিল সহ দুই মাদক কারবারি গ্রেফতার মিরপুর সাংবাদিক কল্যাণ সমবায় সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি জহিরুল ইসলাম-সম্পাদক মারুক হায়দার দেশজুড়ে অবৈধ আবাসন প্রকল্পের ছড়াছড়ি বিতর্কিত ঢাকা বোট ক্লাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্ছেদ অভিযান সাংবাদিককে হুমকি, অফিসে দাপট ; দুলালের খুঁটির জোর কোথায়? সাভারে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কিশোরগঞ্জে খাস সম্পত্তির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধের অভিযোগ! ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশদাতা ৩৯ ম্যাজিস্ট্রেট বহাল তবিয়তে

শিক্ষায় এগিয়ে নারী, কিন্তু কর্মক্ষেত্রে কেন পিছিয়ে?

বিশেষ প্রতিবেদক:
Update : শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

প্রতিবছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের সময় পত্রিকার প্রথম পাতা ভরে থাকে মেয়েদের সাফল্যের ছবি। কিন্তু যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ বা নেতৃস্থানীয় বৈঠকে চোখ বোলানো হয়, তখন সেই প্রথম পৃষ্ঠার মুখগুলোকে আর দেখা যায় না! তাই প্রশ্ন থেকে যায়, শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীদের এই সাফল্য কাজের জায়গায় তাদের প্রতিনিধিত্বে প্রতিফলিত হয় না কেন?

দেখা যাচ্ছে, দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হলেও উচ্চশিক্ষায়, বিশেষ করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (স্টেম) বিষয়ে এই সংখ্যা যথেষ্ট পরিমাণ কমে যায়। গত বছর মার্চে করা ইউএনডিপির এক গবেষণা থেকে দেখা যায়, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে স্টেমে নারীদের প্রতিনিধিত্ব মাত্র ২৩.৯ শতাংশ, যা এর বৈশ্বিক গড় ২৯.৩ শতাংশ থেকে অনেক কম। আবার যারা স্টেম বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন, তাদের অনেকেই কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারছেন না। এ ক্ষেত্রে নানা রকম আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাধা নারীদের জন্য প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করে।

স্টেমে নারীদের অংশগ্রহণ কম থাকার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। আমাদের প্রচলিত সামাজিক রীতিনীতি ও ধারণার কারণে প্রযুক্তি ও প্রকৌশলের মতো পেশাগুলোতে এখনও পুরুষদের বেশি উপযুক্ত মনে করা হয়। উচ্চশিক্ষার ব্যয়ের মতো অর্থনৈতিক কারণেও অনেক পরিবার মেয়েদের স্টেম বিষয়ে শিক্ষা দিতে নিরুৎসাহিত করে। তার ওপর যেসব নারী এসব বাধা ডিঙিয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেন, তারাও প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হন। এসব কারণে স্টেম বিষয়ে নারীদের অগ্রগতি ব্যাহত হয়।

স্টেমে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে প্রথমেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। প্রয়োজনে স্টেম বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে নারীদের জন্য বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পড়াশোনা শেষ করার পর এসব বিষয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে নারীদের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে নারী প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদরা তাদের সাফল্যের গল্প সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে বাকিদের উৎসাহিত করতে পারেন।

কাজের জায়গাতেও নারীবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখতে হবে। হয়রানি বা বৈষম্যের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কঠোর হতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীদের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করার পাশাপাশি তাদের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে যথাযথ দক্ষতা উন্নয়নবিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। স্টেমে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে চাইলে সরকারি-বেসরকারি খাত উভয়কেই উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে।

স্টেম খাতে নারীদের এগিয়ে নিতে সরকার উদ্যমী হয়ে কিছু নীতি প্রণয়ন করতে পারে। এর মধ্যে থাকতে পারে, যেসব প্রতিষ্ঠান নারীর জন্য সমান সুযোগ তৈরি করবে, তাদের জন্য বিশেষ কর ছাড় বা নারীদের জন্য ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সরকারকে একযোগে কাজ করতে হবে। আবার ওই নারীর পরিবার ও বন্ধুবান্ধব বা স্বজনদেরও এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী। শিক্ষা, কাজ, সামাজিক বা অর্থনৈতিক উন্নয়ন যাই হোক না কেন, অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে বাইরে রেখে কোনো দেশই এগিয়ে যেতে পারবে না।

আজ বিজ্ঞানে নারী ও মেয়েবিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস। এটি সত্যি যে, নারী শিক্ষায় অগ্রগতি হয়েছে। তবে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিতের (স্টেম) সব স্তরে এখন বৈষম্য বিদ্যমান; বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে স্টেম ব্যাকগ্রাউন্ড আছে এমন নারীদের সফলতার হার খুব বেশি না। এমন বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের নিজেদের প্রশ্ন করতে হবে, যে মেয়েরা মাধ্যমিকে পত্রিকার প্রথম পাতা জুড়ে থাকছে, তারা কেন দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার সুযোগ পাচ্ছে না! এই প্রশ্নগুলো আমাদের মেয়েদের শিক্ষার মানোন্নয়ন ও তাদের কাজের ক্ষেত্রে সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার পথ খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। সবাই যখন একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন, নারীরা কেন এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকবে!

কুমকুম হাবিবা জাহান: হেড অব সিনিয়র স্কুল, গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাতারকুল, ঢাকা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মূখপত্র।। NBB

Acting Editor: Neamul Hassan Neaz

Mofussal Editor: Kamrul Hasan Rony

Office: +8809611584881, 01320950171

E-mail: newsnbb365@gmail.com

Translate »