পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় বনটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলীয় সুরক্ষাবলয় হিসেবে যুগ যুগ ধরে রক্ষা করছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষদের। তবে বনের প্রতি অত্যাচার বেড়েই চলেছে দিন দিন। অভয়ারণ্যে অবাধ যাতায়ত, মাছ ধরতে বনে আগুন, নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার, চোরা শিকারীদের বন্যপ্রাণী নিধন, গাছ কাটাসহ বিভিন্ন অপরাধ ঘটছে বন ঘিরে। গত দুই যুগে অন্তত ২৭ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বন বিভাগে। অপরাধ কমাতে নজরদারী ও আইনের কঠোর প্রয়োগের বিকল্প নেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা’র খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, বনবিনাশী বিভিন্ন প্রকল্পে সুন্দরবন আজ হুমকির মুখে। অভয়ারণ্যে অবাধ যাতায়াত বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল নষ্ট করছে। বাধ্য হয়ে প্রাণীদের আরও গভীরে চলে যেতে হচ্ছে।
সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম এনবিবিকে বলেন, বন আইনে হওয়া মামলার বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতায় পার পেয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন প্রকৃত দোষীরা। ফলে পুনরায় একই অপরাধে লিপ্ত হন তারা। সুন্দরবন বাঁচাতে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সব পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে প্রতি বছর ১৪ ফেব্রয়ারি সুন্দরবন দিবস পালন করে আসছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সংগঠন। তাদের দাবি সুন্দরবনের এসব সমস্যা নিরসনে দিবসটির জাতীয় স্বীকৃতি প্রয়োজন।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তৎপরতার কথা জানিয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান এনবিবিকে বলেন, সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি ২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বনের খুলনা রেঞ্জের কালাবগী ও শেখের টেক, চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক ও শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্দায় ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব উপায়ে সম্প্রসারিত হয়েছে ইকো ট্যুরিজম, যা সাড়া ফেলেছে পর্যটকদের মধ্যে।