রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়া হেট ল্যাব ২০২৪ সালে ভারতে ১ হাজার ১৬৫টি সংখ্যালঘুবিদ্বেষী বক্তব্যের ঘটনা নথিবদ্ধ করে।আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৬৬৮টি। রাজনৈতিক সমাবেশ, ধর্মীয় সভা, প্রতিবাদ মিছিল ও সাংস্কৃতিক জমায়েতের মতো জায়গায় এসব বক্তব্য লক্ষ্য করা যায়।
ইন্ডিয়া হেট ল্যাব তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ‘আসল ঘটনা হলো ২০২৪ সাল ছিল ভারতে জাতীয় নির্বাচনের বছর। ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত সাত ধাপে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন ২০২৩ সালের তুলনায় (২০২৪ সালে) বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের ঘটনার ধরন তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’
রয়টার্স জানিয়েছে, ওয়াশিংটনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস এই প্রতিবেদন নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকের কয়েকদিন আগে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো।
মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ভারতের সংখ্যালঘুদের সঙ্গে অন্যায্য আচরণের অভিযোগ এনেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তবে মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার ও দল বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে, তাদের নীতি, যেমন খাদ্য ভর্তুকি প্রকল্প এবং বিদ্যুতায়ন অভিযান, সব ভারতীয়কে উপকার করছে।
ইন্ডিয়া হেট ল্যাব বলা আরও বলেছে, এক-তৃতীয়াংশ বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দেয়ার ঘটনা ঘটে গত বছরের ১৬ মার্চ থেকে ১ জুন পর্যন্ত। এ সময় নির্বাচন চলছিল। বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য আরও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে মে মাসে। এপ্রিলে নরেন্দ্র মোদি ভারতের মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত বছরের নির্বাচনে মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) টানা তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় এবং জোটের মিত্রদের ওপর নির্ভর করে সরকার গঠন করে। ইন্ডিয়া হেট ল্যাব জানিয়েছে যে, গত বছর বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ৮০ শতাংশ ঘটনা ঘটেছে বিজেপি ও তার মিত্রদের দ্বারা শাসিত রাজ্যগুলোতে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক কাশ্মীরি সাংবাদিক রাকিব হামিদ নায়েক প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়া হেট ল্যাব ওয়াশিংটন-ভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থা। এটি অলাভজনক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ অর্গানাইজড হেটের একটি প্রকল্প। তবে বিজেপি সরকারের অভিযোগ, সংস্থাটি ভারতের পক্ষপাতদুষ্ট চিত্র উপস্থাপন করে।