• বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৭:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
কিশোরগঞ্জে ফাজিল মাদ্রাসায় ভুয়া কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ সাভারে ৯৪ বোতল ফেনসিডিল সহ দুই মাদক কারবারি গ্রেফতার মিরপুর সাংবাদিক কল্যাণ সমবায় সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি জহিরুল ইসলাম-সম্পাদক মারুক হায়দার দেশজুড়ে অবৈধ আবাসন প্রকল্পের ছড়াছড়ি বিতর্কিত ঢাকা বোট ক্লাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্ছেদ অভিযান সাংবাদিককে হুমকি, অফিসে দাপট ; দুলালের খুঁটির জোর কোথায়? সাভারে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কিশোরগঞ্জে খাস সম্পত্তির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধের অভিযোগ! ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশদাতা ৩৯ ম্যাজিস্ট্রেট বহাল তবিয়তে ইশরাক হোসেন ইস্যুতে আমাকে দোষারোপ করা সমীচীন হবে না: আসিফ মাহমুদ

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত কতজন সাংবাদিক?

এনবিবি ডেস্ক:
Update : রবিবার, ৪ মে, ২০২৫

গত ২৯শে এপ্রিল সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সংবাদ সম্মেলনে ‘জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে অবমাননাকর’ প্রশ্ন করার অভিযোগে তিনটি টিভি চ্যানেলের (দীপ্ত, এটিএন বাংলা, চ্যানেল আই) তিনজনের চাকরিচ্যুত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টিকে ঘিরে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যদিও উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে ‘অপেশাদারসুলভ’ প্রশ্ন করায় তিন সাংবাদিককে ‘চাকরিচ্যুত’ করতে ওই তিন টিভি চ্যানেলের কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারের কোনো পর্যায়, বা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তবুও প্রশ্ন উঠেছে, গত নয় মাসে দেশের মোট কতজন সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হয়েছেন?

দৈনিক কালের কণ্ঠের ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি দেশের প্রতিনিধি গত সপ্তাহে তার ফেসবুকের পোস্টে দাবি করেন, ড. ইউনূসের সরকারের আমলে এ পর্যন্ত  এক হাজারের বেশি সাংবাদিকের চাকরিচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তার দীর্ঘ ওই স্ট্যাটাস ‘ভাইরাল’ (আলোচিত) হয়। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, জ.ই. মামুনসহ অনেক সাংবাদিক কালের কণ্ঠের ওই প্রতিনিধির পোস্ট নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন। সাংবাদিকদের ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপগুলোসহ দেয়ালে দেয়ালে বেকার সাংবাদিকের সংখ্যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। আসলেই কী অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এক হাজারের বেশি সাংবাদিক বেকারত্বের কবলে পড়েছেন?

অতীতে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংবাদমাধ্যমগুলোতে, বিশেষ করে সরকার নিয়ন্ত্রিত মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন পর্যায়ের ‘রদবদল ও ভিন্নমতের সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতির’ ঘটনা ঘটেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের আমলের মতো এমন ব্যাপকভাবে পরিবর্তন অতীতে কখনো হয়নি বলে গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা বলছেন। তবে এ সময়ের মধ্যে ঠিক কতজন সাংবাদিক চাকরিচ্যুত, বা বেকার হয়েছেন, এর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান, এমনকি সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে লিখিত কোনো হিসাব রাখে না। তারা জরিপও করে না।

গত বছরের ২১শে ডিসেম্বর সম্প্রচার সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার’ (বিজেসি) জরিপের ভিত্তিতে সাজানো এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানায়, ২০২৪ সালে দেশের টেলিভিশনগুলোতে কর্মরত ১৫০ জনের বেশি সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। জরিপের ফল বলছে, চাকরিচ্যুতির বেশিরভাগ ঘটনা ঘটেছে ওই বছরের ৫ই আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর।

বিজেসি’র প্রতিবেদনে দেশের দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন সংবাদপত্রগুলোর সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুত হওয়ার ঘটনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিজেসি’র ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর আরো সাংবাদিকের চাকরিচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফলে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে বলে অনেক সাংবাদিক সুখবর ডটকমকে জানিয়েছেন। তাদের সংখ্যা যোগ করলে সংগঠনটির তালিকা আরো দীর্ঘ হবে বলে মনে করেন তারা।

গত ১৯শে জানুয়ারি দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের দাবি করেন, ‘বিভিন্ন সূত্রের তথ্যমতে, মুদ্রিত গণমাধ্যম ও অনলাইন পোর্টালে চাকরি হারিয়েছেন আরও অন্তত দুই শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী। কাছাকাছি সময়ে এত বিপুলসংখ্যক গণমাধ্যমকর্মীর চাকরি হারানোর ঘটনা নজিরবিহীন।’ তিনি প্রতিবেদনটি প্রচার হওয়ার আগের এক বছরের মধ্যে তারা চাকরি হারান বলে উল্লেখ করেন।

ধারণা করা হচ্ছে, এ সরকারের আমলে মালিকপক্ষের নিজস্ব সিদ্ধান্তে (সেখানে প্রশাসনের হাত নেই) প্রকাশনা বন্ধ হওয়া দৈনিক ভোরের কাগজ, আমাদের নতুন সময়, আমাদের অর্থনীতি ও ‘আউয়ার টাইমস’সহ কয়েকটি পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী জি এম কাদেরের উল্লেখিত সংখ্যার অন্তর্ভুক্ত। কোন পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এ হিসাব দিচ্ছেন, এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে কয়েকবার ফোন করলেও জিএম কাদের তা ধরেননি।

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ইটিভির সম্প্রচার, আওয়ামী লীগের আমলে চ্যানেল ওয়ান, দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচার ও প্রকাশনা সরকার বন্ধ করে দিলে চাকরি হারানো সাংবাদিকের সংখ্যা তখন দীর্ঘ হয়। অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পত্রিকার প্রকাশনা ও টিভির সম্প্রচার বন্ধ করেনি।

দৈনিক মানবজমিনের সহযোগী প্রকাশনা ‘সাপ্তাহিক জনতার চোখের’ গত ১৫ই ফেব্রুয়ারির সংখ্যার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘৩৬ জুলাইয়ের পট পরিবর্তনের পর গণমাধ্যমেও বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। এ পর্যন্ত দুই ডজনেরও বেশি গণমাধ্যমকর্মীকে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কমপক্ষে আটটি সংবাদপত্রের সম্পাদক এবং ১১টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বার্তা প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছে বা পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ সরকার পরিবর্তনের পরপরই নিজ থেকেই চাকরি থেকে সরে গেছেন।’

প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমের নির্বাহী সম্পাদক, প্রধান বার্তা সম্পাদক এবং বার্তা সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাদের পরিবর্তে এসব পদে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি ও জামায়াত বিট করা সাংবাদিকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বর্তমান ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখা গণমাধ্যম মালিকদের প্রতিষ্ঠানে এসব পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক চাকরি হারিয়েছেন।’

চলতি বছরের ২০শে মার্চ প্রকাশিত আমার দেশের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘শেখ হাসিনার পতনের পর গণমাধ্যমের শীর্ষ পদে রদবদল হয়েছে। সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন পোর্টালের অন্তত ৩০-৩৫টি জায়গায় বিভিন্ন পদে এ রদবদল হয়। কয়েকটি মিডিয়ার মালিকানাও বদল হয়েছে। গত ১৬ বছরের শাসনামলে বেশিরভাগ গণমাধ্যমই নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় পরিণত হয়েছিল। শেখ হাসিনার জয়গান করাই ছিল এসব মিডিয়ার কাজ। টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও অনলাইন মিডিয়ায় বড় বড় পদে থাকা কিছু সাংবাদিকের কাজই ছিল সরকারের তোষণ।’

আমার দেশ বলে, ‘দলীয় বাড়াবাড়ি ও ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিকদের কোণঠাসা করে রাখা হয় বছরের পর বছর। জুলাই বিপ্লবের পর চিহ্নিত এসব সাংবাদিক কালো তালিকাভুক্ত হন গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের দ্বারা। অনেকে পালিয়ে যান নিজেদের অপকর্মের কথা স্মরণ করে। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হন। এমন অবস্থায় মিডিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের মিডিয়া সচল ও টিকিয়ে রাখতে পেশাদার ও বিএনপিপন্থী সাংবাদিকদের নিয়োগ দেয়।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মূখপত্র।। NBB

Acting Editor: Neamul Hassan Neaz

Mofussal Editor: Kamrul Hasan Rony

Office: +8809611584881, 01320950171

E-mail: newsnbb365@gmail.com

Translate »