• বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহীত টিসিবির পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ভোক্তারা কিশোরগঞ্জে ফাজিল মাদ্রাসায় ভুয়া কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ সাভারে ৯৪ বোতল ফেনসিডিল সহ দুই মাদক কারবারি গ্রেফতার মিরপুর সাংবাদিক কল্যাণ সমবায় সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি জহিরুল ইসলাম-সম্পাদক মারুক হায়দার দেশজুড়ে অবৈধ আবাসন প্রকল্পের ছড়াছড়ি বিতর্কিত ঢাকা বোট ক্লাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্ছেদ অভিযান সাংবাদিককে হুমকি, অফিসে দাপট ; দুলালের খুঁটির জোর কোথায়? সাভারে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কিশোরগঞ্জে খাস সম্পত্তির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধের অভিযোগ! ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশদাতা ৩৯ ম্যাজিস্ট্রেট বহাল তবিয়তে

বরিশালে আয়না ঘরের সন্ধান লাভ! দুজনকে উদ্ধার,হাসপাতালে ভর্তি

মামুনুর রশীদ নোমানী, বরিশাল:
Update : সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫

*বাস মালিক সমিতির নথুল্লাবাদ অফিস যেন একটি আয়না ঘর

*বিআরটিসির দুজন স্টাফকে আটক করে লাঠিপেটা

*ডালিমের নেতৃত্ব অপকর্ম ও ব্যাপক চাদাঁবাজী

*রাষ্ট্রীয় যাত্রী পরিবহন বিআরটিসির বাস চলাচলে বাধাঁ প্রদান

*বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা

বরিশালের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ব্যাপক চাদাঁবাজী।এখান থেকে ছেড়ে যাওয়া বাস ও পরিবহন থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাদাঁ আদায় করা হয়। ৫ আআগষ্টের পরে ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিয়ে টার্মিনালটি দখল করেছে বিএনপির একটি গ্রুপ।দখল করেই বাস মালিক সমিতির একটি কক্ষকে বানিয়েছে আয়না ঘর।
বিআরটিসির বাস চলাচলে বাধাঁ দেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত।শুধু বাধাঁ প্রদানই নয় বিআরটিসির স্টাফদের ধরে নিয়ে কথিত আয়না ঘরে নিয়ে বেদম মারধর ও বিভিন্ন কায়দায় শারিরিক নির্যাতন করা হচ্ছে।১৬ মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে এর প্রমান।ভিডিওতে বিআরটিসির স্টাফদের লোহার রড় দিয়ে মারধর করা হচ্ছে। ইত্তেহাদের কাছে ভিডিওটি সংরক্ষিত রয়েছে।

কথিত আয়নাঘর থেকে ১৬ মে রাতে গুরুতর আহতবস্থায় বিআরটিসির দুজন স্টাফকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।তাদের দুজনের অবস্থা আশংকাজনক।
এদিকে বাস মালিক সমিতির কথিত নেতা ডালিমকে ১ নং আসামী ও অজ্ঞাতনামা আরো দশ -বারোজনকে আসামী করে আহত তৌহিদ বিমানবন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছেন।

বরিশাল খুলনা ভায়া পয়সারহাট রুটে বিআরটিসির বাস চলাচল করে ২৫ বছর। সম্প্রতি বরিশাল বাস মালিক সমিতি নথুল্লাবাদের নেতারা বিআরটিসির সকাল পৌনে সাতটা ও সকাল ১১ টায় চলাচলরত ঐ রুটের বিআরটিসির বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।১২ দিন বন্ধ থাকার পরে গত বুধবার ১৪ মে থেকে দুপক্ষের আলোচনা শেষে ফের বাস চলাচল শুরু হয়।
১৬ মে শুক্রবার সকালের ও বিকেলে ফেরৎ আসা বিআরটিসির ড্রাইভার তৌহিদ ও সুপারভাইজার কামালকে নথুল্লাবাদস্থ বাস মালিক সমিতির অফিসে নিয়ে রাত ৮টার দিকে দু দফা সমিতির নেতাদের নির্দেশে বাস মালিক ডালিমের নেতৃত্বে একদল লোক মারপিট করে। এ সময় বিআরটিসি ডিপোতে আতংক ছড়িয়ে পরে।ভুক্তভুগীরা জানান,বিআরটিসির দুজনকেই এলোপাতাড়ি ভাবে লোহার রড দিয়ে মারধর করে আহত করেছে।হামলাকারী ও নির্দেশদাতা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবী করেছে ভুক্তভুগীরা।
এ ঘটনায় বিআরটিসির শ্রমিকরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও আইনশৃংখলায় নিয়োজিত বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কে এই ডালিম:

বরিশালের উত্তর অংশের পরিবহন খাত ডালিমের হাতে জিম্মি। ডালিমের নেতৃত্বে গড়ে উঠছে একটি চাদাঁবাজ ও সন্ত্রাসী গ্রুপ।এদের থেকে মুক্তি পেতে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার দাবি নিরীহ বাস মালিক ও শ্রমিকদের ।ডালিম এখন এক চাদাঁবাজের নাম তার নেতৃত্বেই লাখ লাখ টাকা চাদাঁবাজী হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

৫ আগষ্ট ছাত্র -জনতার আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল,মালিক সমিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় বিএনপিপন্থী পরিবহন নেতারা।এসব নেতাদের অনেকের বাসও নেই।নিয়ন্ত্রনে নিয়ে প্রতিটি বাস-ট্রাক থেকে প্রতিদিন প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় করা হয়। ‘গেটপাস বা জিপি’ কিংবা সমিতির সদস্য ফি—এ জাতীয় নানা অজুহাতে দৈনিক, মাসিক ও এককালীন আরও বিপুল টাকা চাঁদা তোলা হয়। সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে সড়ক খাতের এ ব্যাপক চাঁদাবাজিরও হাতবদল হয়ে গেল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।পরিবহনের একটি নুতন বাস নথুল্লাব্দে প্রবেশ করলে দিতে হয় মালিক সমিতির কর্তাদের তিন থেকে চার লাখ টাকা।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশ করা এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে ব্যক্তিমালিকানাধীন বাস ও মিনিবাস থেকে বছরে ১ হাজার ৫৯ কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়। এই চাঁদার ভাগ পান দলীয় পরিচয়ধারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী, ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তা-কর্মচারী, মালিক-শ্রমিক সংগঠন ও পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিরা।

গবেষণায় আরও এসেছে, দেশের বৃহৎ বাস কোম্পানির প্রায় ৯২ শতাংশ পরিচালনার সঙ্গে রাজনীতিবিদেরা সম্পৃক্ত। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই প্রভাবশালী দলের সঙ্গে যুক্ত।

দেখা গেছে, পরিবহন খাতে তিন পদ্ধতিতে চাঁদা তোলা হয়। এক. দৈনিক মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদা; দুই. বাস-মিনিবাস নির্দিষ্ট পথে নামানোর জন্য মালিক সমিতির চাঁদা এবং তিন. রাজধানী ও এর আশপাশে কোম্পানির অধীন বাস চালাতে দৈনিক ওয়েবিল বা গেটপাস (জিপি) চাঁদা।

বিআরটিএর হিসাবে দেশে বাস, মিনিবাস ও ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান আছে প্রায় তিন লাখ। তিন পদ্ধতির অধীন এসব যানবাহন থেকে বছরে অন্তত ১ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা চাঁদা ওঠে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতা বদলের পর অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের পরিবহন খাতের কার্যালয় দখলের মূল লক্ষ্য হচ্ছে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ। আর চাঁদাবাজির কারণেই পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা, বাড়তি ভাড়ার নৈরাজ্য। এর মূল ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণ। তিনি আরও বলেন, ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রের সংস্কার। ক্ষমতা পরিবর্তনের পরই রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা ছাত্র–জনতার লক্ষ্যের বিপরীত। এভাবে রাজনৈতিক কর্তৃত্বের কারণে অতীতে দেখা গেছে পরিবহন খাতের নেতারা সরকারের চেয়েও বেশি শক্তিশালী মনোভাব দেখিয়েছেন। ফলে এই খাতের বিশৃঙ্খলা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মূখপত্র।। NBB

Acting Editor: Neamul Hassan Neaz

Mofussal Editor: Kamrul Hasan Rony

Office: +8809611584881, 01320950171

E-mail: newsnbb365@gmail.com

Translate »